Study help guide

কম পড়ে ভালো ফলাফল করার উপায়

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি সকলে ভালো আছেন। শিক্ষাজীবন মানে প্রচুর পড়াশোনা প্রচুর অধ্যাবসায় অতঃপর সফলতা। তবে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা অতিরিক্ত চাপের কারণে মানসিকভাবে অস্বস্তি অনুভব করেন। যদিও পড়াশোনা বেশি না করলে ফলাফল ভালো করার কিছু কৌশল রয়েছে তবুও মূলত বিষয় হল পড়াশোনায় মনোযোগ থাকতে হবে প্রচুর। ছাত্র জীবন জীবনের সেরা সময় হত যদি পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকতো। পরীক্ষাকে ছাত্রছাত্রীরা একটি চাপের বিষয় মনে করেন। তাই অনেকে খামখেয়ালি ভাবে মনে করেন যে কত মজাইনা হতো যদি পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকতো। কিন্তু পরীক্ষা তো ছাত্রছাত্রীদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। পরীক্ষা নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা থাকেই সবসময় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। পড়াশোনা আছে মানে পরীক্ষা আছে। তবে কম পড়াশোনা করে কিভাবে ভালো ফলাফল করা যায় এই ব্যাপারে আটটি টিপস রয়েছে যা আপনি ছাত্র জীবনে প্রয়োগ করলে ভালো ফলাফল করতে পারবেন। আসুন জেনে নেই আটটি কৌশল যা আপনাকে ভালো ফলাফল করতে সাহায্য করবে অল্প পড়াশোনা করার পরেও। সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন তবে ই বুঝতে পারবেন।

কম পড়ে ভালো ফলাফল করার উপায়

 

বর্তমান সময়ের ছাত্রছাত্রীদের জীবনে করোনা এক বিশাল অভিশাপ হিসেবে এসেছিল ছাত্র জীবনে। যার ফলে পড়াশোনা মানে একটি বোঝা া মনে হয়েছে। করোনার প্রভাব কমে যাওয়ার সাথে সাথেই প্রচুর পরীক্ষার চাপ ছাত্রছাত্রীদেরকে বিষিয়ে তুলেছে একপ্রকার। ২০২১ সালের পরীক্ষার্থীরা দারুন ঝামেলা পার করেছে করনাকালীন সময়ে। সব শিক্ষার্থীরা চায় অল্প পড়াশোনা করে ভালো একটা ফলাফল করতে কিন্তু এমনটা কি সম্ভব তুলনামূলক কম পড়েও বছর শেষে দারুন ফলাফল করা যায় কিছু ব্যতিক্রম কৌশল রপ্ত করতে পারলে।
১০টি কৌশল জেনে নিন যা আপনাকে অল্প পড়াশোনা করার পরেও ভালো ফলাফল করতে সহযোগিতা করবে। কি ১০টি বিষয় আসুন জেনে নেই।

Study tips

১. খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা
২. মেমোরি টেকনিক ব্যবহার করা
৩. নোট তৈরি করা
৪. ক্লাস লেকচার মনোযোগ সহকারে শোনা
৫. গ্রুপ স্টাডি করা
৬. ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া
৭. না দেখে লেখার অভ্যাস করা
৮. পড়াগুলোকে সুবিন্যস্ত করে সাজিয়ে নিজের মতো পড়া
৯. ভালো ছাত্রদের বন্ধু বানানো
১০. হাতের লেখা সুন্দর করা

এই দশটি কৌশল অবলম্বন করলে অল্প করে ভালো ফলাফল করা সম্ভব। আসুন তাহলে বিস্তারিতভাবে জেনে নেই কেন এই দশটি কৌশল আপনাকে অল্প করে ভালো ফলাফল করতে সহযোগিতা করবে।

১.খাতায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা

আপনি কতটা সুন্দর ভাবে খাতায় প্রশ্নের উত্তর লিখতে পেরেছেন এর উপর নির্ভর করবে আপনার ভালো ফলাফল। অনেক ছাত্রছাত্রী আছে প্রচুর পড়াশোনা করে কিন্তু পরীক্ষার খাতায় সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে পারেনা কিংবা প্রকৃত উত্তরটি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারে না। আপনি যদি পরীক্ষার খাতায় যে প্রশ্ন করা হয়েছে সে বিষয়ে উপর সঠিক উত্তরটি সুন্দর এবং সঠিক পন্থায় উপস্থাপন করতে পারেন তবে অবশ্যই পরীক্ষক খাতা মূল্যায়ন করার সময় প্রচুর মার্কস দিবে।

২. মেমোরি টেকনিক ব্যবহার করা

সৃষ্টিকর্তা মানুষের মাথায় প্রচুর স্মৃতিশক্তি দিয়েছেন। কিন্তু মানুষের যথার্থ কৌশলের অভাবে স্মৃতিশক্তি ব্যবহার করতে পারেনা। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা মুখস্ত করার ক্ষেত্রে খুবই বিরক্ত অনুভব করেন। আসলে পড়াশোনার ক্ষেত্রে মুখস্ত করার প্রয়োজন হয় তবে কৌশলী ছাত্ররা মুখস্ত করার ক্ষেত্রে কিছু সাংকেতিক ভাষা কিংবা মেমোরি টেকনিক ব্যবহার করে। সহজভাবে বলতে গেলে ধরুন আপনি একটি গল্প মুখস্থ করতে চাচ্ছেন কিন্তু গল্পটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মুখস্থ হচ্ছে না সে ক্ষেত্রে আপনি গল্পের মূল চরিত্র সাংকেতিক ভাষায় মনে রাখার চেষ্টা করুন তবেই পরীক্ষার খাতায় লিখার সময় আপনি আপনার মন মতো করে সহজেই লিখতে পারবেন। এছাড়াও যারা বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র তারা মুখস্ত রাখার জন্য অনেক সূত্র সংক্ষিপ্ত চিহ্ন ব্যবহার করে মুখস্থ করে থাকেন এই কৌশল গুলো আপনাকে পরীক্ষার খাতায় লিখার ক্ষেত্রে ব্যাপক সহযোগিতা করবে।

৩.নোট তৈরি করা

আপনি যখন পড়তে বসবেন তখন আপনাকে মনে রাখতে হবে সব পড়াই মুখস্ত রাখার সম্ভব না তবে গুরুত্বপূর্ণ লাইন গুলো ডাইরিতে কিংবা রাফ খাতায় নোট করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিকট সহযোগিতা নিয়ে কিংবা সাজেশন থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো নোট করে রাখবেন তবে বেশি পড়ার প্রয়োজন হবে না অল্প পড়াতেই পরীক্ষায় ভালো লিখতে পারবেন।

 

Student tips

৪. ক্লাস লেকচার মনোযোগ সহকারে শোনা

বই পড়ে মুখস্থ করে পরীক্ষায় লেখা যতটা সহজ ভাবে বলছি ততটা সহজ নয়। এজন্য আপনাকে বইয়ের পড়াগুলো মনে রাখার জন্য ক্লাসে যখন শিক্ষক লেকচার প্রদান করেন তখন মনোযোগ সহকারে শোনার অভ্যাস গড়তে হবে। আপনি একটু খেয়াল করে দেখুন বইয়ের পড়া যত টানা মুখস্ত রয়েছে তার থেকে আপনার শিক্ষক ক্লাসের লেকচার দেয়ার সময় কখন কি ভঙ্গিতে কথা বলেছেন কি উদাহরণ বলেছেন সেই কথাগুলো আপনার ঠিকই মনে আছে। কি ঠিক বলেছি তো! তাহলে আপনি এই কৌশলটাকে পুঁজি করে ক্লাসরুমে যখন শিক্ষক লেকচার প্রদান করে তখন মনোযোগ সহকারে শুনুন তবেই প্রাসঙ্গিক লেখা আসলে খুব সহজেই মনে করে লিখতে পারবেন।

৫. গ্রুপ স্টাডি করা

অল্প পড়াশোনা করে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার কৌশলের মধ্যে অন্যতম গ্রুপ স্টাডি করা। আপনি একা যতটা মেধা খাটাতে পারবেন যখন আপনার একাধিক বন্ধু মিলে গ্রুপ স্টাডি করবেন তখন একাধিক ব্যক্তির সাথে পরামর্শ এবং পড়াশোনা করার কারণে আপনার মনের মধ্যে প্রতিযোগী মনোভাব সৃষ্টি হবে। গ্রুপে পড়াশোনা করার মাধ্যমে আপনার যে কোন বিষয় মুখস্ত হবে খুব সহজে। যার ফলে পরীক্ষায় ভালো লিখতে পারবেন। আর এভাবেই অল্প পড়াশুনা করেও ভালো ফলাফল করার জন্য ভূমিকা রাখে গ্রুপ স্টাডি। এইজন্যেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে গ্রুপ স্টাডির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই আমরা বলব মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাজীবনেও গ্রুপ স্টাডি চর্চা করা উচিত।

৬. ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া

শিক্ষাজীবনে ভুল হতে পারে তবে হতাশ হওয়া যাবেনা। ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষাজীবনে সিদ্ধান্তের পড়াশোনায় ভুল হতেই পারে তবে সেই ভুল ধরে বসে থাকা যাবে না হতাশ হওয়া যাবেনা। আপনার ছাত্র জীবনের ভুল কোথায় কেন আপনি ভাল ফলাফল করতে পারছেন না তা খুঁজে বের করুন এবং তার বিপরীতে শক্ত অবস্থান নিয়ে ভালো ফলাফলের লক্ষ্যে চেষ্টা করুন।

৭. না দেখে লেখার অভ্যাস করা

অল্প পড়াশোনা করে ভালো ফলাফল করার অন্যতম উপায় এটি। আপনার যদি মুখস্থ শক্তি কম হয় অথবা আপনি যদি অল্প পড়ে ভালো ফলাফল করতে চান তবে একটু পরে না দেখে লেখার অভ্যাস করুন। তাহলে কি হবে? এতে করে আপনার যে বিষয়ে লিখছেন তা মুখস্থ হয়ে যাবে। আর এভাবেই একটু করে না দেখে লেখার অভ্যাস আপনাকে পরীক্ষার খাতায় প্রচুর লিখতে সাহায্য করবে যা ভালো ফলাফল করার জন্য দারুন ভূমিকা রাখবে।

 

Study help guide

৮.পড়াগুলোকে সুবিন্যস্ত করে সাজিয়ে নিজের মতো পড়া

পড়াশোনার কিছু নিয়ম রয়েছে তার মধ্যে নিজের মতো করে সাজিয়ে নেয়া । আপনি কোন বিষয়ে কখন পড়বেন কিংবা কোন বিষয়গুলি শুধু পড়বেন তা নির্বাচন করুন এবং সুবিন্যাস্ত ভাবে সাজিয়ে নিন। এতে করে আপনার বেশি পড়ার ঝামেলা কমে যাবে। গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো নোট করুন কিংবা মার্ক করুন এবং মুখস্থ কিংবা মনে রাখার চেষ্টা করুন। তবে অতিরিক্ত পড়া থেকে আপনি রেহাই পেলেন এবং অল্প করেই ভালো লিখতে পারার সুযোগ তৈরি হলো আপনার যা ভালো ফলাফলের সহযোগিতা করবে।

৯.ভালো ছাত্রদের বন্ধু বানানো

কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। শিক্ষা জীবনে বন্ধু বান্ধবী দারুন ভূমিকা রাখে। আপনি যদি ভাল ছাত্র হতে চান তবে আপনাকে বন্ধু নির্বাচনে সচেতন হতে হবে। আপনাকে দায়িত্বশীল হতে হবে। আপনাকে ভাবতে হবে আমি বন্ধু তাদের নির্বাচন করব যারা ভাল ছাত্র এবং পড়াশোনার ব্যাপারে দায়িত্বশীল। কেননা আড্ডাবাজির জন্য যদি বন্ধু নির্বাচন করে থাকেন তাহলে পড়াশোনার বারোটা বেজে যাবে। তাই ভালো ছাত্র ছাত্রীদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন তাদের সাথে মিশন তাদের সাথে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করুন। তাহলে চলাফেরার মাধ্যমে আপনি পড়াশোনার সংস্পর্শ পাবেন যা আপনাকে গ্রুপে স্টাডি ও পরামর্শমূলক ছাত্র জীবন গড়তে সহযোগিতা করবে।

১০.হাতের লেখা সুন্দর করা

আপনি যদি অল্প পড়াশোনা করে ভালো ফলাফল করতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই হাতের লেখা সুন্দর করতে হবে। একজন পরীক্ষক যখন খাতা মূল্যায়ন করেন তখন তিনি লেখার মান এবং লেখার ধরনের উপর বিশেষ দৃষ্টির রাখেন। আপনি কতটা গুছিয়ে প্রকৃত উত্তর উপস্থাপন করেছেন এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ ততটাই গুরুত্বপূর্ণ আপনি কতটা সুন্দর করে লিখতে পেরেছেন উত্তরটি। এই দুটি বিষয় যখন মিলে যাবে তখন আপনি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করবেন নিশ্চিত থাকুন।

উপরে উল্লেখিত ১০ টি বিষয় ছাড়াও আরো কিছু বিষয় রয়েছে যা পারিবারিক ও সামাজিকভাবে পড়াশোনার ওপর প্রভাব ফেলে। একজন ভালো ছাত্রের পরিবেশ হতে হবে পড়াশোনামুখী। পরিবার সমাজ এবং শিক্ষাঙ্গনে পড়াশোনার প্রতি প্রচুর নজরদারি থাকলে তবে ভালো ছাত্র হওয়া সম্ভব এবং অল্প পড়াশোনা করা সত্ত্বেও তুখোর মেধাবী হয়ে ওঠা সম্ভব।

উপসংহার

পড়াশোনার চাপ ছাত্রছাত্রীদের জীবনে কমন বিষয় হলেও অল্প পড়াশোনার মাধ্যমে যদি ভালো ফলাফল করা যায় তবে মন্দ কি। উপরের দশটি কৌশল ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে ফুটিয়ে তুলতে পারলে অবশ্যই অল্প পড়াশোনা করেও ভালো ফলাফল করা সম্ভব। আশা করছি আপনি যদি ছাত্র কিংবা ছাত্রী হয়ে থাকেন উপরের দশটি বিষয় মনোযোগ সহকারে পড়ে বুঝে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করুন অবশ্যই ভালো ফলাফল করতে পারবেন অল্প পড়াশোনা করেও। আপনাদের সুস্থ জীবন কামনা করে শেষ করছি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *