স্মার্ট হওয়ার সহজ কৌশল

নিজেকে স্মার্ট করার এ টু জেড কৌশল

নিজেকে স্মার্ট করতে কে না চায়! এটি করা জরুরি প্রয়োজনও বটে। তবে সঠিক কৌশল জানা না থাকায় অনেকে নিজেকে সভ্য বা সুদর্শন তৈরি করতে পারছেন না। আসুন তাহলে জেনে নিন কিভাবে ছেলেরা স্মার্ট হবে এবং meyera kivabe smart hobe ও নিজেকে সুন্দর করে তোলার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।

নিজেকে আপডেট করার উপায়

দিন যতই গড়াচ্ছে সমাজ সভ্যতা ও সংস্কৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে না চলতে পারলে। আপনি অনেক পিছিয়ে পড়বেন।

এজন্য আপনাকে জানতে হবে স্টাইলিশ হওয়ার উপায় । তাই সঠিক তথ্য উপাত্ত প্রদান করা হয়েছে এই পোস্টে। মেয়েদের স্মার্ট হওয়ার উপায়, ছেলেদের স্মার্ট হওয়ার উপায়, কথাবার্তায় স্মার্ট হওয়ার উপায়, ভদ্র হওয়ার কৌশল, নিজেকে পরিপাটি করার উপায় সম্পর্কে। আর এইসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব আজকের আর্টিকেলে।

স্মার্টনেস কি

ইংরেজিতে স্মার্ট বলতে উজ্জ্বল সুদর্শন নবীন দর্শন পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি বোঝায়। স্মার্ট বলতে বোঝায় চটপটে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, গোছালো, বুদ্ধিমান এবং বুদ্ধি ও মেধাভিত্তিক ধীর গতি সম্পন্ন মানুষকে।

একজন মানুষের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই দিকটি অর্জন করতে হলে করণীয় কি। আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন কাজ করছে আপনার মধ্যে কিছু বদ অভ্যাস রয়েছে যা এ স্মার্ট হবার পথে বাঁধা। তাহলে আপনাকে বলব smart হওয়ার জন্য আপনাকে অভ্যাস পরিবর্তন করার উপায় জানতে হবে।

স্মার্ট ছেলেদের ছবি

আপনাকে আরো জানতে হবে কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করে তোলা যায়। আপনাকে তখনই মানুষ পছন্দ করবে যখন আপনি স্মার্টনেস অর্জন করতে পারবেন। আসুন তাহলে জেনে নেই কিভাবে লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করা যায়।

বদ অভ্যাস পরিবর্তন করুন

আপনার অজান্তেই আপনার মধ্যে অসংখ্য বদ অভ্যাস বসবাস করছে। সময়ের সাথে নিজেকে পরিবর্তন করুন। বদ অভ্যাস গুলো ঠান্ডা মাথায় খুঁজে বের করুন এবং স্থায়ীভাবে পরিত্যাগ করুন।

আপনি হয়তো নিজের বদ অভ্যাস গুলো দীর্ঘদিন থেকে লালন করছেন তাই আপনার নজরে আপনার সকল কাজকে ঠিকঠাক মনে হচ্ছে। কিন্তু আপনার বন্ধুবান্ধব ও জীবনসঙ্গিনী আপনার মধ্যে কিছু বদ অভ্যাস লক্ষ্য করছে।

Smartness pic

আপনি যদি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার উপায় খুঁজে থাকেন তবে আপনাকে বলব অপমান মনে না করে বদ অভ্যাসগুলোকে খুঁজে বের করে আস্তে আস্তে পরিবর্তনের চেষ্টা করুন সময়ের সাথে স্থায়ীভাবে বদ অভ্যাসগুলো নিজের মধ্যে থেকে ঝেড়ে ফেলুন।

আল্লাহর জন্য নিজেকে পরিবর্তন

স্মার্ট বলতে একজন সভ্য ভদ্র এবং উদার মনের মানুষকে বুঝায়। এছাড়াও লাইফস্টাইল পরিবর্তন তখনই জরুরি হয় যখন আপনি নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত হন।

তখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগে নিজেকে প্রচুর পরিবর্তন করতে হবে, কিভাবে নিজেকে পরিবর্তন করব ইত্যাদি। দুশ্চিন্তা বাদ দিন। মূলত কথা হচ্ছে যদি আপনার নিয়ত থাকে নিজেকে পরিবর্তন করার তবে আপনাকে প্রথমে ভাবতে হবে।

আমি কোন মানুষের প্রয়োজনে নিজেকে পরিবর্তন করব না। একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে পরিবর্তন করব।আপনি যে ধর্মের লোক হন না কেন সৃষ্টিকর্তার জন্য যখন আপনি নিজেকে পরিবর্তন করবেন তখনই আপনি পরিপূর্ণ স্মার্ট হতে পারবেন।

Original smartness

কারণ সৃষ্টিকর্তা আপনার কাছে কোন স্বার্থ চায় না সে চায় আপনি ভালো থাকুন আপনার ব্যবহার ভালো হোক আচরণ ভালো হোক আপনি একজন জান্নাতী কিংবা স্বর্গ মানুষের পরিণত হন।

মূলত নির্ভেজাল এবং সময়োপযোগী পরিপাটি মানুষকেই স্মার্ট বলে। আর এটি আপনি পরিপূর্ণ পাবেন তখন যখন আপনি আল্লাহর জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতে চেষ্টা করবেন তখনই সফল হবেন।

নেশাদার দ্রব্য পরিহার করুন

একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে আপনি নিশ্চয়ই নিজেই পছন্দ করেন না। আর কেউ করবেও না। কারণটা হল একজন মাদকাসক্ত মানুষ হিতাহিত জ্ঞানহীন বিবেকের বিরুদ্ধে কাজ করে। কখন কি করে কখন কি বলে তার কোন খেয়াল নেই।

এটি কারোই কাম্য নয়। তাহলে আপনি যদি নিজেকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে চান তবে এই স্বভাবের কোন একটি যদি আপনার মধ্যে থাকে তা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। নতুবা আপনি স্মার্ট হতে পারবেন না।

কথা বলার ধরন পরিবর্তন করুন

কেউ যদি একেবারেই চুপচাপ স্বভাবের হয় তাকে বেশিরভাগ মানুষ পছন্দ করেন না । আবার কেউ যদি অতিরিক্ত কথা বলে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে তাকেও কেউ পছন্দ করেনা। এখন আপনার মনে প্রশ্ন স্মার্ট হওয়ার জন্য তাহলে কি করতে হবে?

উত্তর সহজ এই দুটি দিকের মাঝামাঝি অবস্থান করুন। কথা বলার স্টাইল পরিবর্তন করুন। নিজস্ব ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী চেষ্টা করবেন প্রয়োজনের কথাটুকু বলে চুপ থাকার অতিরিক্ত কোন কথা বলা বাদ দিন।

Smart lady

স্মার্ট হওয়ার জন্য আপনি চাইলে কথা বলার স্টাইল কিংবা গুছিয়ে কথা বলার উপরে ইউটিউবে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু কোর্স আছে সেই ভিডিও গুলো দেখতে পারেন। অথবা স্মার্ট ভাবে কথা বলার ওপর কিছু ট্রেনিং করানো হয় মোটিভেশনাল সেগুলো গ্রহণ করতে পারেন।

মুখে হাসি রাখুন

একজন গোমরা মুখের মানুষকে নিশ্চয়ই আপনি পছন্দ করেন না। অতিরিক্ত ফাজলামি করে অথবা দুশ্চরিত্রের লোক নিশ্চয়ই তাকে আপনি ভালো বলবেন না।

মূলত সভ্য সমাজ মানুষের আচরণের উপর তাকে ভালবাসে পাশে থাকে। কিন্তু ভদ্র ও স্মার্ট না হওয়ার কারণে অনেকে আবার এড়িয়ে চলতেও দেখা যায়। তবে স্মার্ট বা গ্রহণযোগ্য সভ্য মানুষ হতে আপনি মুখে হাসি রাখুন।

Smile lady

অতিরিক্ত গোমরামুখী ও থাকবেন না কিংবা অতিরিক্ত ফানি মোডে ও থাকবেন না মাঝামাঝি থাকুন প্রয়োজনের কথা পেশ করুন এবং সেটি মিষ্টি হাসির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলুন।

পোশাক পরিচ্ছেদ পরিবর্তন

আপনি যদি সমাজে সভ্য ও স্মার্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তবে কিছুটা পোশাকেও পরিবর্তন প্রয়োজন।

আপনি হয়তো ভাবতে পারেন ব্যবহারের সাথে পোশাকের কি সম্পর্ক! পোশাক মানুষের স্বভাব এর চিহ্ন। একজন ময়লা আবর্জনা যুক্ত পোশাক পরিহিত ব্যক্তিকে নিশ্চয়ই কেউ পছন্দ করেনা।

আবার ছেলে হয়ে মেয়েদের পোশাক পরা কিংবা মেয়ে হয়ে ছেলেদের পোশাক পরা কেউ সমাজ ভালো চোখে দেখেনা। এমন কিছু পোষাক রয়েছে যা ধর্মীয় গণ্ডির বাহিরে এ ধরনের পোশাক পড়েও স্মার্ট হওয়া যায় না।

Hijab pic

তাহলে আপনি কোন ধরনের পোশাক পড়বেন? অথবা কি ধরনের পোশাক পড়লে স্মার্ট হওয়া যায়? ধৈর্য ধরুন সম্পূর্ণ পোস্টের মাধ্যমে আপনাকে স্মার্ট হওয়ার এ টু জেড উপায় সম্পর্কে জানাবো।

আপনি যদি ছেলে হন তাহলে এমন পোশাক পড়ুন যা আপনাকে মানাবে। এবং যে পোশাক আপনার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। এর মানে এই নয় পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির ছেঁড়াফাটা শার্ট প্যান্টের কথা বলছি।

আপনি টি-শার্ট পড়ুন অথবা জিন্স করুন সেটি যেন আপনার চরিত্রের উপর দাগ না ফেলে। আপনি চাইলে শার্টের সাথে প্যান্ট বেল্ট মুড়িয়ে পড়তে পারেন।

মেয়েদের ক্ষেত্রে পোশাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ মেয়েরাই মনে করেন ছোটখাটো ড্রেস পরলেই সম্ভবত স্মার্ট হওয়া যায়।

কিন্তু আপনি যদি প্রকৃত সৌন্দর্য ও স্মার্টনেস হতে চান তবে আপনাকে শারীরিক গঠন প্রদর্শন কে বিরত রেখে এমন পোশাক পড়তে হবে। যা আপনাকে সভ্য ও ভদ্র মেয়ে হিসেবে প্রমাণ করে।

Young smart lady

ইদানিং হয়তো লক্ষ্য করছেন কাতার বিশ্বকাপে হিজাব একটি আদর্শ পোশাকে সমাজের প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আমিও ব্যক্তিগতভাবে মনে করি হিজাব মেয়েদের একটি স্মার্টনেস বাড়ানোর অন্যতম পোশাক।

ছোটখাটো পোশাক পরিহার করে ঢিলেঢালা উজ্জ্বল নয় স্বাভাবিক রং এর সালোয়ার কামিজ পড়তে পারেন। সাথে মোটা কাপড়ের হিজাব পরলে আপনাকে স্মার্ট লাগবে।

আরো পড়ুন: অঙ্গভঙ্গির ভাষা বোঝার কৌশল

চশমা পরিধান করুন

একজন মানুষ কতটা সুদর্শন তা তার মুখ মন্ডলেই পরিচয় পাওয়া যায়। আর মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে পোশাক পরিচ্ছেদ এবং অভ্যাস।

আর স্মার্টনেস বলতে মূলত ব্যবহার ও বাহ্যিক সচেতনাতাকেই বোঝায়। আপনি যদি ছেলে হন তাহলে উপরে বর্ণিত শার্ট টি-শার্ট কিংবা যেকোন ো ঢিলেঢালা পোশাকের সাথে কালো রঙের চশমা পড়ুন।

এতে শুধু স্মার্ট দেখাবে বিষয়টা তা নয় এর সাথে সাথে আপনার চোখ নিরাপদ থাকবে দেখতেও অনেক চমৎকার লাগবে। মেয়েদের ক্ষেত্রেও চশমা দারুন সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে।

Hero alom sunglasses pic

আপনি যদি হিজাব পরার পাশাপাশি চশমা পরার অভ্যাস করে তোলেন তবে আপনাকে দেখতে অনেকটা সুন্দরী ও ভদ্র মেয়ে মনে হবে। ব্যবহারের পাশাপাশি পোশাক পরিচ্ছেদ ও কিছু অভ্যাস গড়ে তুললেই আপনি একজন স্মার্ট মেয়ে হিসেবে পরিচিত হবেন।

শ্রোতা হওয়ার মানসিকতা তৈরি করা

আপনি যে একজন ধৈর্যশীল ভদ্র মানুষ তা প্রমাণ হবে যখন আপনি বলার থেকে শোনার প্রতি আগ্রহী থাকবেন। ক্ষেত্রবিশেষে দেখা যায় আমাদের স্বভাবে সবসময় বলার ক্ষেত্রে আগ্রহ বেশি।

কিন্তু কেউ কোন কথা বললে কথা শেষ হওয়ার পূর্বেই নিজের কোন বিষয় থাকলে প্রদর্শন করে ফেলি। এটি একটি বদ অভ্যাস এবং আনস্মার্ট ব্যক্তির কাজ। আপনি যখন কারো সাথে আলাপে জড়িত হবেন।

সব সময় খেয়াল রাখবেন আপনাকে কম কথা বলতে হবে এবং আপনি যার সাথে আলোচনায় জড়িত তাকে কথা বলার সুযোগ দিবেন। এই অভ্যাসটি গড়ে তুলতে পারলেই আপনি সফল। গবেষণায় দেখা গেছে যারা শ্রবণের ক্ষেত্রে ধৈর্য ও দায়িত্বশীল তারাই প্রকৃত জ্ঞানী। আর জ্ঞানীরা সমাজের প্রকৃত স্মার্ট।

আপনি যদি স্মার্ট হওয়ার কথা চিন্তা করে থাকেন কখনোই আগ বাড়িয়ে নিজে বেশি কথা বলার চেষ্টা করবেন না। সব সময় শোনার চেষ্টা করবেন এবং প্রয়োজন মাফিক হাসিমুখে উত্তর প্রদান করবে এটাই স্মার্টনেস।

ছাড় দেয়ার মানসিকতা তৈরি করুন

মানুষ স্বভাবতই কুপ্রবৃত্তির শিকার। আপনি নিজেই যথেষ্ট এই মানসিকতা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। আপনি খুব খেয়াল করবেন যখন আপনার মনে হবে আপনি পারফেক্ট আপনার পরিবর্তন হওয়ার প্রয়োজন নেই তখনই বুঝবেন আপনি ভুলের মধ্যে আছেন।

আপনার মনে যখন এই ধরনের কথা চলে আমি এমনই! আমার এরকমটাই ভালো লাগে! আমি পারবো না! আমার দ্বারা সম্ভব না! আমি কখনোই ভুলবো না! আমি কখনোই ছাড়বো না! আমি অন্যদের মতো না! আমার জায়গায় আমি ঠিক আছি।

এই ধরনের কথাগুলো আপনার স্মার্টনেসের বিরোধী কথা। আপনাকে অবশ্যই পরিবর্তন হতে হবে এবং ত্যাগের মানসিকতা তৈরি করতে হবে তবেই আপনি স্মার্ট হতে পারবেন।

আরো জানুন: ভুলেও গুগলে যে ৫টি বিষয়ে সার্চ করবেন না

ভুল স্বীকার করতে শিখুন

আপনার কোন কথা বা কাজে যদি মনে হয় বিষয়টি ভুল ছিল তবে জড়িত ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন। যদি আপনার মনে হয় আমি উচিত কাজ করেছি তবে আপনি স্মার্ট কিংবা ভদ্র মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন না।

আপনি মনের খায়েশের শিকার হয়ে আছেন। আপনি যদি স্মার্ট হওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন তবে আজ থেকে পাইকারি হারে সবাইকে ক্ষমা করা শুরু করুন। কারো সাথে দ্বন্দ্ব নয় সকলের সাথে দোস্তি এই মানসিকতা স্মার্টনেসের মূল বক্তব্য।

নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলুন

হতাশাকে কখনোই নিজের মনে ঠাঁই দিবেন না। সব সময় মনে করবেন আপনি পারবেন আপনাকে পারতেই হবে। মনমরা হয়ে কখনো থাকার চেষ্টা করবেন না। জীবনে কষ্ট দুঃখ আসতেই পারে তা নিয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বসে থাকবেন না।

মনের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জোর করুন। আজ থেকে আমার শক্তিশালী পথচলা শুরু হলো এই মনোবল তৈরি করুন। আপনার দ্বারা সম্ভব না আপনি পারবেন না এ ধরনের কথা বাদ দিন।

Hijab lady photo

আপনার মধ্যে ঘাটতি আছে আপনি দেখতে অসুন্দর আপনি স্মার্ট হতে পারবেন না এই ধরনের নেতিবাচক চিন্তাভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। নতুন করে বাঁচতে শিখুন। নতুন ভাবে স্মার্ট জীবনযাপন শুরু করুন।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

আপনি খেয়াল করুন তো আপনি বাসায় যখন খাবার খান এবং আত্মীয়দের বাসায় যখন খাবার খান এই দুইয়ের মাঝে কোন পরিবর্তন খেয়াল করেছেন কি? নিশ্চয়ই লেখাটি পড়ে হাসছেন!

কারণ নিজের বাসায় যখন খাবার খান তখন অনেকটা তাড়াহুড়ো করেন একপ্রকার নির্লজ্জের মত হামাগুড়ি দিয়ে কিংবা চিল্লাচিল্লি করতে থাকেন। কিংবা প্রয়োজনীয় কোন জিনিসের জন্য তর্কে জড়িয়ে যান। অথবা আপনার খাবারের স্টাইল কিংবা গতি একটু বেমানান হয়ে থাকে।

কিন্তু যখন আত্মীয় বন্ধু-বান্ধবের বাসায় খাবার টেবিলে বসেন তখন কত টাইনা লজ্জা ও সৌজন্যবোধ নিয়ে খাবার গ্রহণ করেন। এটাই স্মার্টনেসের পার্থক্য। যথাসম্ভব শান্ত মেজাজে রুচিশীল স্বভাবে খাবার গ্রহণ করার অভ্যাস করুন।

আত্মীয়দের বাসায় যেমন দায়িত্বের সাথে পরিবেশ বজায় রেখে খাবার গ্রহণ করেন অল্পতে সন্তুষ্ট থাকেন ঠিক তেমনি নিজ বাসায় অভ্যাস করুন। কোন প্রকার ইতস্ত বোধ না করে খাবার তালিকায় থাকা হালাল সব ধরনের খাওয়ার গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করুন।

স্মার্ট হওয়া মানে এই নয় দামি দামি খাবার খেতে হবে। আপনি চাইলে একই খাবার বা সবজি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পারেন। স্মার্টনেস হল নতুন কিছু তৈরি করা। শুধুমাত্র বদ অভ্যাস বর্জন করা।

আরো পড়ুন: স্ত্রীর যে চারটি গুণ থাকলে স্বামী সৌভাগ্যবান

রুটিন মাফিক জীবন যাপন

আপনি যে একজন দায়িত্বশীল মানুষ এর জন্য আপনাকে রুটিন মাফিক জীবন যাপন করতে হবে। উন্নত বিশ্বের দিকে তাকান তাদেরকে কেন স্মার্ট বলা হয়? তারা সকালের কাজ বিকেলে করে না।

বিকেলের কাজ সকালের জন্য রেখে দেয় না। স্মার্ট বলতে সময়ের কাজ সময়ে এবং আগামী সময়ের কাজ রুটিন মাফিক সাজিয়ে করাকে বোঝায়।

আজ থেকে ব্যক্তিগত প্রতিবেদন তৈরি করুন প্রতিমাসের জন্য। আগামীকাল কি করবেন লিখে রাখুন সেই অনুযায়ী চলার চেষ্টা করুন। দিনশেষে কাজগুলো রুটিন মাফিক হলো কিনা আত্মসমালোচনা করুন।

বন্ধু নির্বাচনের সতর্ক থাকুন

আপনি যদি প্রকৃতপক্ষে স্মার্ট ও ভদ্র মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তবে অবশ্যই আপনার বন্ধু ও সঙ্গী নির্বাচনের সচেতন থাকতে হবে। একজন খারাপ মানুষ অসংখ্য ভালো মানুষের ভিড়ে নিজেকে পরিবর্তন করতে পারে।

অপরপক্ষে একজন ভালো মানুষ অসংখ্য খারাপ ব্যক্তির ভিতরে প্রবেশ করলে নিজেও হার হামেশাই খারাপ হয়ে যাবে। তাই বন্ধু নির্বাচন করুন শিক্ষিত নৈতিকতা মানসিকতা সম্পন্ন।

শারীরিক পরিবর্তনে ব্যায়াম করুন

আপনি যদি রোগা পাতলা হয়ে থাকেন তাহলে খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যখান এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।

অপরপক্ষে আপনি যদি অতিরিক্ত মোটা হয়ে থাকেন তাহলে স্লিম ও স্মার্ট বডি ফিটনেস তৈরি করার জন্য নিয়মিত নিয়মমাফিক খাবার গ্রহণ ও শরীর চর্চা করুন। নিজ নিজ ধর্মীয় কর্ম সম্পাদন করুন। সকালে ঘুমানো থেকে বিরত থাকুন।

বই পড়ার অভ্যাস করুন

আপনি কতটা সৃজনশীল ও মেধাবী তা বোঝা যাবে আপনি কতটা বইকে ভালবাসেন। আপনার সহপাঠী যা জানে না তা আপনি বলতে পারেন কিভাবে? নিশ্চয়ই কোথা থেকে শিখেছেন কিংবা বই পড়েছেন।

জ্ঞানী মানুষের লক্ষণ বইকে ভালোবাসা। আপনি যদি অন্যদের থেকে অতিরিক্ত জ্ঞান অর্জন করতে চান কিংবা স্মার্ট হতে চান তাহলে আপনাকে নতুন নতুন গবেষণামূলক বই পড়তে হবে।

আপনি যদি আপনার সহপাঠীর থেকে বেশি তথ্য জেনে থাকেন তবে অবশ্যই আপনি স্মার্ট। এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা পার্শ্ববর্তী দেশের প্রধানমন্ত্রী কে এটাও জানে না কত বড় বেখেয়াল মানুষ চিন্তা করুন। বই ও মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত না থাকার কারণে এই অবস্থা।

অশ্লীলতা থেকে বেরিয়ে আসুন

টিক টক, ফেসবুক,লাইকি, youtube ,ইনস্টাগ্রাম টুইটারে আপনার অ্যাকাউন্ট নেই বলে যে আপনি স্মার্ট নন ব্যাপারটি এমন নয়। বর্তমান সময়ে ছেলেমেয়েরা স্মার্টনেস বলতে যেটি বোঝাতে চাচ্ছেন তা হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে হবে।

আর ভাইরাল ও জনপ্রিয় হতে যদি সর্ব নিকৃষ্ট কাজটি করতে হয় তবুও করতে হবে। এ কেমন কথা! আসলেই কি স্মার্টনেস বলতে অশ্লীলতা বুঝায়? না প্রিয় বন্ধুগণ আপনি হয়তো স্মার্টনেসের ভুল ব্যাখ্যা বুঝতেছেন।

প্রকৃতপক্ষে যদি আপনি স্মার্ট হতে চান তবে আপনাকে কাণ্ডজ্ঞানহীন হওয়া চলবে না। আপনি খেয়াল করেছেন এ যুগে ভাইরাল হওয়ার ইস্যু নিয়ে কত অঘটন ঘটে গেল। এই অশ্লীলতা কি করে স্মার্টনেস হতে পারে। স্মার্ট তো সেই ব্যক্তি যার সাথে অশ্লীলতার কোন যোগাযোগ নেই। আপনি আপনার মেধা দিয়ে জনপ্রিয় হন।

আপনি যখন আপনার মেধা শিক্ষা ও ব্যবহার দিয়ে সমাজের জন্য ভালো কিছু করবেন তখন আপনি পরিচিতি না পান সমস্যা নেই কিন্তু আপনি যে প্রকৃতপক্ষে স্মার্ট এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। উলঙ্গ কিংবা বেহায়াপনার মাধ্যমে নিজেকে সমাজে পরিচিত করার নাম যদি স্মার্ট হয় তবে পশু আর মানুষের মধ্যে পার্থক্য কোথায়??

দাড়ি রাখা

ছেলেদের দাড়িতে কতটা সুন্দর লাগে তা যদি সকল ছেলেরা উপলব্ধি করত তবে কেউ দাড়ি কাটতো না। স্মার্ট ছেলেরা অবশ্যই দাড়ি রাখে। কারণ দাড়ি রাখলে যেমন দেখতে সুন্দর ও স্মার্ট লাগে।

ঠিক তেমনই দাড়ি রাখার অনেক বৈজ্ঞানিক উপকারিতাও রয়েছে। দাড়ি রাখলে আপনার যৌন শক্তি ভালো থাকে স্মৃতিশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। একজন স্মার্ট মানুষ হওয়ার জন্য দাড়ি আপনাকে সহযোগিতা করবে। স্মার্ট বলতে যা বোঝায় একজন সভ্য ভদ্র চরিত্রবান মানুষ।

আর দাড়ি রাখলে আপনি অন্যায় কাছ থেকে স্বভাবতই বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। উত্তর মিলে গেছে! দাড়ি আসলেই মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। দাড়ি রাখা স্মার্ট ব্যক্তিরা এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত। তাই আপনি চাইলে দাঁড়ি রাখতে পারেন।

Mizanur Rahman Azhari Mizanur Rahman Azhari দাড়িতে কত সুন্দর!

বর্তমান সময়ে দাড়ি একটি সামাজিক ভূষণে পরিণত হয়েছে। মুসলিম ছেলেদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের যুবকেরা দাড়ি রাখতে শুরু করেছেন। আপনিও যদি এর গুরুত্ব বুঝে থাকেন তাহলে দাড়ি রাখতে পারেন।

Reference link: Info Search 24

আরো জানুন: ছেলেদের যে সাতটি গুণ মেয়েরা পছন্দ করে

স্ত্রীর যে চারটি গুণ থাকলে স্বামী সৌভাগ্যবান

উপসংহার

মূলত সৎ চরিত্র ও মেধার মাধ্যমে পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র এবং পরবর্তী জীবনের জন্য নিজেকে সঠিকভাবে প্রস্তুত করার নাম স্মার্টনেস। ভুল ব্যাখ্যার কারণে অনেকে স্মার্টনেস বলতে অনৈতিক কাজকে বোঝাচ্ছেন। আশা করছি আজকের আর্টিকেলে আপনি ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন।

এটাই প্রকৃতপক্ষে স্মার্টনেসের ব্যাখ্যা। কখনোই অপপ্রচারকারী কিংবা অপব্যাখ্যা কারী শয়তানদের ফাঁদে পা দিয়ে স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন স্মার্টনেস একটি যোগ্যতা দক্ষতা নৈতিকতা ভিত্তিক আমল।

যার শুধুমাত্র আপনাকে সমাজে গ্রহণযোগ্য করবে না ধর্ম ও পরকাল জীবনেও এটি আপনার কাজে লাগবে যদি এর সঠিক ব্যাখ্যা বুঝে থাকেন। আশা করছি পোস্টটি আপনার সহায়ক হবে। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আজ এ পর্যন্তই আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখুন পরবর্তী শিক্ষামূলক আর্টিকেলে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *