প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আশা করি সকলে ভাল আছেন। দিন যতই যাচ্ছে ফেসবুক ব্যবহারকারী বেড়েই চলেছে প্রতিনিয়ত। এতসব ব্যবহারকারীর ভিড়ে কোনটা আসল কোনটা নকল একাউন্ট সেটা চেনা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আসল নকল চিনতে ফেসবুক ব্যবহারকারীর প্রোফাইলে নীল টিক চিহ্ন যুক্ত ভেরিফাইড ব্যাজ সরবরাহ করে থাকে। তাই আপনি যদি আপনার ফেসবুক প্রোফাইল কিংবা আপনার পেইজ ভেরিফাই করতে চান তবে আপনাকে নিচে উল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাই করে নিতে হবে। প্রতিযোগিতার ভিড়ে একই ধরনের একাধিক আইডি থেকে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কিংবা পেজটি অফিশিয়ালি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ থেকে নীল টিক চিহ্ন দিয়ে মার্ক করা অত্যন্ত জরুরি বিষয় হয়ে উঠেছে বর্তমান সময়ে। তাই আসুন জেনে নেই কিভাবে আপনার প্রোফাইল কিংবা পেজ ভেরিফাইড করবেন। সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।
ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাইড করা কেনো প্রয়োজন?
বর্তমান সময়ে ফেসবুক ব্যবহারকারী যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমন এক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কিংবা পেইজের ফলোয়ার সংখ্যা বাড়ছে। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমান সময়ে ফেসবুক প্রোফাইল প্রফেশনাল মোড অন করেছে এবং পেজ থেকেও ইনকাম করার পদ্ধতি চালু করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তাই কোন একটি পেজ কিংবা ফেসবুক প্রোফাইল যদি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে তবে সেই প্রোফাইল কিংবা পেজটিকে টার্গেট করে অসাধু কিছু অনলাইন এক্টিভিটিসরা নকল কিংবা ফেক অ্যাকাউন্ট কিংবা পেজ সেই প্রোফাইল কিংবা পেজকে টার্গেট করে তৈরি করে থাকে। যার ফলে প্রকৃত প্রোফাইল কিংবা পেজ কোনটি তা ভিজিটররা চিনতে পারে না। তাই আপনার ফেসবুক প্রোফাইল কিংবা পেজটি খুব সহজে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় ভেরিফাইড করে নেয়া প্রয়োজন।
ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাইড করার নিয়ম
একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর সম্পূর্ণ তথ্য যাচাই-বাছাই করার পর ফেসবুক ব্যবহারকারীর প্রোফাইল বা একটি পেজে নীল টিক চিহ্ন যুক্ত ভেরিফাইড ব্যাচ নির্ধারণ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। আর এই কাজটি করার জন্য আপনাকে কোন প্রকার বাড়তি অর্থ দিতে হবেনা ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে। এতে ব্যবহারকারী দাও সহজে বুঝতে পারবেন ফেসবুক পেজ কিংবা প্রোফাইলটি আসল নাকি নকল।
ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাইড করবেন যেভাবে
নীল টিক চিহ্ন যুক্ত ভেরিফাইড প্রোফাইল বা পেজ তৈরি করার জন্য প্রথমে ব্যবহারকারীকে তার প্রোফাইল বা পেজের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার জন্য www. facebook.com/help/contact/295038365360854 এই ঠিকানার ভেরিফিকেশন রিকোয়েস্ট ওয়েব পেজে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে ফেসবুক পেইজ না প্রোফাইল ভেরিফাইড করবেন তা উল্লেখ করে ফেসবুকের নিকট নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হবে।
ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাইড করতে যা যা প্রয়োজন
উপরে উল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত ফর্ম এ ফেসবুকের কাছে আপনার প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন জাতীয় পরিচয় পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পানি বা বিদ্যুতের বিলের অনলিপি আপলোড করতে হবে। এরপর প্রোফাইল বা পেজ যাচাইয়ের জন্য বিভাগ নির্বাচন করে আপনি যে দেশে বসবাস করছেন সেটি লিখতে হবে।
অডিয়েন্স বিভাগে আপনার বন্ধু বা ফলোয়ারের সংখ্যা জানানোর পাশাপাশি আপনার জনপ্রিয়তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে সাবমিট অপশনে ক্লিক করলেই আপনার আবেদন চলে যাবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে।
ফেসবুক আপনার আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে ভেরিফাইড চিহ্ন যুক্ত করে দেবে । আবেদন বাতিলও করতে পারে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। আবেদন যাচার জন্য সাধারণত ৪৮ ঘন্টা থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় নিয়ে থাকে ফেসবুক।
ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাই করার উপকারিতা
সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমান সময়ে ব্যাপক ব্যাপকৃত মাধ্যম। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ফেসবুক চেনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুর্লভ। ফেসবুক ব্যবহারকারী যেমন দিন দিন বাড়ছে তেমন অসাধু কিছু হ্যাকার কিংবা কুচক্রী মহল ফেসবুকে অপরাধ মূলক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করা, ডুবলিকেট বা নকল ফেসবুক একাউন্ট তৈরি করে হুমকি প্রদান, ফেসবুক থেকে তথ্য চুরি করা সহ ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করার ব্যাপক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বর্তমান সময়ে। তাই নিজের ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখতে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল কিংবা পেজটির যথার্থ মূল্যায়ন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রোফাইল কিংবা পেজ ভেরিফাইড করা প্রয়োজন। আপনি যখন আপনার প্রোফাইল কিংবা পেজ ভেরিফাইড করবেন তখন দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি সেই প্রোফাইল কিংবা পেজ দাবি করতে পারবে না। অর্থাৎ অন্য কেউ যদি আপনার মতো হুবহু পেইজ কিংবা প্রোফাইল চালু করে সেটাকেই প্রকৃত আইডি হিসেবে দাবি করে তবে সে ভুয়া হিসেবে গণ্য হবে আপনার একাউন্ট কিংবা পেজটি ভেরিফাইড থাকার কারণে। সব মিলিয়ে বর্তমান সময়ে ফেসবুক ভেরিফাইড থাকা মানে আপনি সচেতন এবং নিরাপদ ফেসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে গণ্য হবেন।
উপসংহার
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ফেসবুক নিত্যনতুন ফিচার যোগ করছে। তাই ফেসবুক ব্যবহারকারী যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমন ফেসবুকে অসাধুচক্রের আধিপত্য বিস্তার বেড়েছে। শত শত নকল আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসাধুচক্র প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তাই আপনার ফেসবুক প্রোফাইল কিংবা পেজটি দ্রুত তার সাথে ভেরিফাই বেস যুক্ত করা সময়ের দাবি। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারে সতর্ক হবেন এবং অতি দ্রুত এই পোস্ট থেকে ফেসবুক প্রোফাইল কিংবা পেজ ভেরিফাইড করার নিয়ম জেনে আপনার প্রোফাইল বা পেজটি ভেরিফাইড চিহ্ন যুক্ত করে ফেলবেন। আপনার নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে শেষ করছি আল্লাহ হাফেজ।