ব্লগ | ব্লগ কি কাকে বলে, কত প্রকার কি কি

ব্লগ | ব্লগ কি কাকে বলে, কত প্রকার কি কি

প্রিয় ভিজিটর বন্ধুরা, আপনি কি ব্লগ সম্পর্কে জানতে চান? আপনি জানেন কি ব্লগিং করে কি করা সম্ভব? তো চলুন জেনে নেই । সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার আহ্বান রাখছি।

ব্লগ কি কাকে বলে, কত প্রকার কি কি

ব্লগ শব্দটি ইংরেজি blog এর বাংলা প্রতিশব্দ যা এক ধরনের অনলাইন জার্নাল। ইংরেজি ব্লগ শব্দটি আবার weblog এর সংক্ষিপ্ত রূপ। যিনি ব্লগে পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে নতুন নতুন কনটেন্ট যুক্ত করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও সাম্প্রতিককালে ব্লগ ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে এক বা একাধিক ব্লগাররা এটি নিয়মিত আপডেট করে থাকেন।

প্রথম দিকের ব্লগগুলো ছিল শ্রেফ সাধারণ ওয়েবসাইটের হাতে বানানো অন্যতর উপকরণ। তবে সময়ের সাথে সাথে বিপরীত ক্রমে পোস্ট করা ওয়ে ভ লেখাগুলো দেখভাল করার সহজ করার জন্য বিবর্তিত কৌশল গুলো প্রকাশ ব্যবস্থাটা বড়সড়ো একটা জনগোষ্ঠীর কাছে হস্তান্তর হয়। তবে তারা তেমন একটা দক্ষ ছিল না। প্রযুক্তিগত দক্ষতা বেশ সহজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে তবে সেই অবস্থান ছিল না তখন। এতে করেই শেষমেষ আলাদা ধরনের একটা অনলাইন প্রকাশনা ব্যবস্থা করে ওঠে যেটা আজকাল আমাদের চেনা যেরকম ব্লগ সেরকম টা তৈরি করে। কিছু কিছু ব্রাউজার নির্ভর সফটওয়্যার এর ব্যবহার এখন ব্লগের একটা নিতান্তই সাধারণ ব্যাপার। ব্লক হোষ্ট করার জন্য আছে নির্ধারিত ব্লক হোস্টিং। এই সার্ভিস ছাড়াও ওগুলো ব্লগ সফটওয়্যার কিংবা নিয়মিত ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার করেও চালানো যায়।

ব্লগিং এর ইতিহাস

বেশিরভাগ ব্লগ কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের সম্পর্কিত ধারা বিবরণী বা খবর জানায় অন্যগুলো আরেকটু বেশি মাত্রায় ব্যক্তিগত পর্যায়ের অনলাইন দিনলিপি সমূহ। একটা নিয়মমাফিক ব্লগ, লেখা, ছবি অন্য ব্লগ ওই পেজ আর এ বিষয়ের অন্য মাধ্যমের লিংক এর সমাহার থাকে। পাঠকদের মিথস্ক্রিয়াময় ছাঁচে মন্তব্য করার সুবিধার্থে রাখা বেশিরভাগ ব্লগের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। সহজ ও প্রাঞ্জল সকলের বোধগম্য ভাষা ব্যবহার করা ব্লগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
বেশিরভাগ ব্লগ মূলত লেখায় আকীর্ণ, কিছু কিছু আবার জোর দেয় শিল্প আঁকা আঁকি, ছবি অর্থাৎ ফটো ব্লগ, আবার কিছু কিছু ভিডিও ব্লগিং সংগীত আর অডিওর উপর ভিত্তি করে ব্লগিং করে থাকে।

মাইক্রো ব্লগিং ও আরেক ধরনের ব্লগিং, ওটাই খুব ছোট ছোট পোস্ট থাকে। ডিসেম্বর ২০১৭ হিসেবে ব্লগ খোঁজার ইঞ্জিন টেকনোরাট্টি প্রায় ১১ কোটি ১২ লাখেরও বেশি ব্লগের খোঁজ পেয়েছে।

নেট দুনিয়ায় সবচেয়ে প্রাচীন এবং গ্রহণযোগ্য মাধ্যম হলো ব্লগ। কিছু আদিকালের ব্লগার, যেমন দ্য মিস্যানথ্রোপিক বীজ ১৯৯৭ সালের দিকে যখন ব্লগিং শুরু করে, তারা নিজেদের অনলাইন উপস্থিতির নাম দিয়েছিল জাইন(zine)। তখনো ব্লক নামের পারিভাষিক শব্দ টা আজকালকার সাধারণ ব্যবহারের পর্যায়ে আসেনি।

জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি শুরুটা ধীর গতির হলেও ব্লগিং দ্রুতই জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় । ১৯৯৯ সাল এবং তারপর থেকে ব্লগ ব্যবহার বাড়তে থাকে। প্রথমদিকে কিছু ব্লক হাতিয়ারের প্রায় সমসাময়িক আবির্ভাব ব্যবহারটা আরো জনপ্রিয় করে তোলে।

•১৯৯৮ সালে ব্রুস আবেলসন ওপেন ডায়েরি নামান, এতে করে হাজারো অনলাইন দিনপত্রীর জন্ম নেয়। ওপেন ডায়রির আবিষ্কার হচ্ছে পাঠক মন্তব্য করতে পারবেন এটাই ছিল প্রথম ব্লগ কমিউনিটি যেখানে পাঠকের অন্য লেখকের ব্লগ সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারতেন।

•১৯৯৯ এর মার্চের ব্র েড ফিক্স পেট্রিক শুরু করেন লাইভ জার্নাল।

•জুলাই ১৯৯৯ এ এন্রু স্মেলস কোন ওয়েবসাইটে একটা খবর পাতা রাখার বিকল্প হিসেবে জন্ম দেন পিটাস ডট কম এরপরই সেপ্টেম্বর 1999 আসে ডাইরি ল্যান্ড যেখানে ব্যক্তিগত দিন পত্তিমূলক কমিউনিটির উপর জোর দেওয়া হয়। ইভান উইলিয়ামস এবং মেগ হুরিহান (পায়রা লেবস) ব্লগার ডট কম চালু করেন আগস্ট ১৯৯৯ সালে।
•সবচেয়ে মজার বিষয় গুগল কর্তৃপক্ষ এটি কিনে নেয় ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।

ব্লগ এর প্রকারভেদ

ব্লগ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে নিচে কয়েকটি ব্লগ এর প্রকারভেদ আলোচনা করলাম:

•সামাজিক ব্লগ: সামাজিক ব্লক হচ্ছে যেখানে বহু সংখ্যক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তাদের সুচিন্তিত মতামত ও লেখনির মাধ্যমে একটি প্লাটফর্ম গড়ে তোলেন।

বাংলা ভাষায় এই পর্যন্ত প্রায় 50 টি সামাজিক ব্লগের সূচনা হয়েছে কিন্তু তাদের অধিকাংশই জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক ব্লগ। কিছু ব্লগার আছে যেখানে তারা নিয়মিত পদচারণা করে থাকে। সামাজিক ব্লগ: সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মানুষের আচার-আচরণ চলাফেরা সমাজের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে তৈরি ব্লগ গুলো হল সামাজিক ব্লগ।

ব্যক্তিগত ব্লগ

এখানে ব্যক্তি কোন একটি বিষয়ের উপর তার মতামত পোষ্ট আকারে তুলে ধরেন এবং পাঠকদের সাথে এর উপর মতামত আদান প্রদান করে থাকে।

নিজের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে লেখালেখি করে অথবা নিজের জ্ঞানকে অন্যের কাছে তুলে ধরার জন্য যে ব্লগ তৈরি করা হয় তাই ব্যক্তিগত ব্লগ।

কোম্পানি/প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ

এ ধরনের ব্লগ তাদের কোন পণ্যবাস সেবার উপর নতুন নতুন তথ্য প্রদান করেন এবং পাঠক তাদের মতামত প্রদান করতে পারেন।
এ ধরনের ব্লগ থেকে কোম্পানির পণ্য বিক্রি হয় কিংবা প্রতিষ্ঠানের প্রচার হয়ে থাকে।

নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ব্লগ

এই ধরনের ব্লগ সাধারণত বেশি দেখা যায় না যেমন টেকি ব্লগ, ফটো ব্লগ, আর্ট ব্লগ, মুভি এবং নাটক গুলো এই ব্লগিংয়ের মাধ্যমে মানুষ সাধারণত ইনকাম করে থাকে। এ ধরনের ব্লগকে সাধারণত কোম্পানি বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ বলে।

বর্তমান সময়ে ব্লগের ধরন

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে মানুষ এখন ইন্টারনেট নির্ভরশীল। তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্লগ লেখা এবং ওয়েবসাইটের ধরনে এসেছে আমূল পরিবর্তন।
দিন যতই যাচ্ছে ব্লগারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্নভাবে ছাত্র-ছাত্রী এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ ব্লগ লেখাকে শখ কিংবা পেশা হিসেবে গ্রহণ করছে।

ব্লগিং কেন করবেন?

ব্লগ বা ব্লগিং শব্দটি শুনে নাই এমন লোকের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম বলে মনে হয়। উন্নত দেশগুলোতে ব্লগিং খুব জনপ্রিয় একটি পেশা। ব্লগিং নিয়ে লেখাপড়া করে এবং ইনকাম করে অনেক মানুষ। প্রায় সব শ্রেণীর পেশার মানুষ উন্নত দেশগুলোতে ব্লগিং এর সাথে জড়িত।

আবার কেউ প্রধান ইনকাম সোর্স হিসেবে জীবন যাপন করে ব্লগিং করার মাধ্যমে। তবে এই ব্লগিং নিয়ে বাংলাদেশে কিছু বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। অনেকে আবার ব্লক বা ব্লগিং সম্পর্কে তেমন কিছু জানেও না। তাই আজকে আমরা ব্লগিং নিয়ে বিস্তারিত অতীত ইতিহাস এবং বর্তমান সময়ে ব্লগিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ব্লগার কে বা কারা?

যারা ব্লগিং করে বা যারা ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট গুলোতে লেখালেখি করে এবং এই ব্লগগুলো যারা বানায় তারাই হচ্ছে ব্লগার অর্থাৎ আমি একটু পরিষ্কার করি, যিনি ব্লক তৈরি করে ব্লগে পোস্ট করেন বা বিভিন্ন লেখালেখি করেন তাদেরকেই বলা হয় ব্লগার।

ব্লগিং করার কারণ

আপনি যদি গুগলের সার্চ বক্সে কোন কিছু লিখে খোঁজেন তাহলে ওই বিষয়ের উপর লেখা অনেকগুলো সাইট বা ব্লক পাবেন যা পরে আপনি উপকৃত হবেন বা অনেক কিছু জানতেও শিখতে পারবেন। এমনভাবে ধরুন আপনি কোন বিষয়ে ভালো জানেন আবার তা অন্য মানুষ জানলে তাদের উপকার হবে।

তাই আপনি ব্লগিং দ্বারা পৃথিবীর মানুষদের জানাতে পারেন আপনার সেই বিষয় সম্পর্কে। এতে করে তারা উপকৃত হবে। এমন কিছু ব্লগার আছে তারা শুধু নিজের শখের বিষয় নিয়ে ব্লগিং করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় তাদের নিজেদের জীবন কাহিনী অন্যের সাথে শেয়ার করা।

অনেক ব্লগার আছে যারা সামাজিক সম্মানের জন্য বা যোগাযোগের জন্য ব্লগিং করে থাকে। তবে বর্তমানে গুগল এডসেন্সের কারণে ৮০% ব্লগার তাদের ব্লগ থেকে ইনকামের জন্য ব্লগিং করে থাকে।

ব্লগিং করে কি হবে?

ব্লগিং করলে লাভ তো আছেই বটে কিন্তু এখানে আপনাকে আগে ঠিক করতে হবে আপনি বাংলায় ব্লগিং করবেন না ইংরেজিতে। আপনি যদি বাংলায় ব্লগিং করেন তাহলে লাভ আছে একটু কম। এতে আপনি ভাল একজন লেখক হতে পারেন এবং অনলাইন ভিত্তিক সাংবাদিকতায় চান্স পেতে পারেন। এছাড়া ভার্চুয়াল জগতে আপনার নাম হবে যা আপনার পরিচিতি ও সুনামবৃদ্ধি পাবে। আবার আপনার ব্লগ যদি হয় নামকরা তাহলে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেয়ার সুযোগ পেতে পারেন যা প্রতি মাসে মোটামুটি আয় করতে পারবেন।

শেষ কথা

ব্লগিং শুধুমাত্র প্রতিভা বিকাশের জায়গা নয় এটি একটি শক্তিশালী মিডিয়া বা গণমাধ্যম। এর সাহায্যে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা যাচ্ছে। ব্লগিং এর ফলে প্রত্যেক দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন ব্যাপারে অভাবনীয় পরিবর্তন চলে আসছে। এর সঠিক প্রয়োগে আমাদের সকলের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
আপনি যদি ব্লগিং শুরু করতে চান তবে আমাদের সহায়তা নিয়ে শুরু করে দিন আপনার প্রতিভা জাতির সামনে পেশ করুন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন উপলব্ধি করেছেন ব্লক কি ব্লগ করে কি করা সম্ভব। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ধন্যবাদ।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *