প্রিয় ভিজিটর বন্ধুরা, আমরা সকলেই জানি জীবন উপভোগের জন্য টাকার প্রয়োজন। টাকা মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্তমানে এই দূর্নীতির যুগে কে কাকে ঠকিয়ে বড় হতে পারে মূলত তারই প্রতিযোগিতা চলছে।যার ফলশ্রুতিতে টাকার নোটগুলোতেও জাল নোট প্রবেশ করেছে । কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জাল নোটের ব্যবসা করে থাকেন যার ফলে আসল টাকা কিংবা নকল টাকার মধ্যে পার্থক্য বোঝা খুবই কঠিন। তাই আজকের আর্টিকেলটিতে আমারা জানিয়ে দিব খালি চোখে জাল টাকার নোট চেনার সহজ উপায় যা আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। আপনি যদি ব্যংকিং লেনদেন করে থাকেন কিংবা টাকা চিনতে অসুবিধায় পরে থাকেন তবে আমাদের এই পোস্টটি আপনার অনেক কাজে আসবে। তাই আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং এটুকু নিশ্চিত যে আজ থেকে আপনাকে কেও ঠকাতে পারবেনা।
খালি চোখে জাল নোট চেনার উপায়
আসল ব্যংক নোট ও জাল নোট এর মধ্যে পার্থক্য করা অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই জাল নোট দ্বারা ক্ষতির সম্মুখীন হয় তাঁরাই যাদের এই সম্পর্কে কোন ধারনাই নেই। সাধারণ মানুষের হাতে জাল নোট চলে আসলে মূলত তারাই এই ক্ষতির সম্মুখীন হয়।মানব জীবনে টাকার গুরুত্ব ব্যপক ।আর এজন্য প্রতিনিয়তই মানুষকে হতে হয় সমস্যার সম্মুখীন।
সমাজে যেমন ভালো মানুষ রয়েছে তেমনি কিছু খারাপ মানুষও রয়েছে। কিছু মানুষ সৎভাবে উপার্জন করার মাধ্যমে পরিবার পরিজনের চাহিদা পূরণ করে। আবার কিছু খারাপ প্রকৃতির মানুষ অসৎ ভাবে উপার্জনের পথ বেছে নেন ।
তাই নিরাপত্তার ব্যাপারে খেয়াল রাখলে যে কেউ আসল নোট চেনার ব্যাপারে সতর্ক হতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে আসল নোটের কিছু বৈশিষ্ট্য।
আসল নোটের বৈশিষ্ট্য
১. প্রথমত অমসলিন মুদ্রণের বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের ১০০,৫০০, ও ১০০০ টাকার নোটের ডান পাশে হেলানো সাতটি সমান্তরাল লাইন থাকে।হেলানো লাইনের নিচে বৃত্তাকার ছাপ দেখা যায়।
১০০০ টাকার নোটে পাঁচটি,৫০০ টাকার নোটে চারটি,১০০ টাকার নোটে তিনটি বৃত্তাকার ছাপ থাকে। এই সমান্তরাল লাইন বৃত্তাকার ছাপ এবং সামনে পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংক লেখা ইনটেক দলীয় পদ্ধতিতে মূদ্রণ করায় এগুলো অমশ্লীন অনুভূত হবে।
২. নোটের বাম পাশে থেকা নিরাপত্তা সুতার দিকে নজর দিতে হবে। নোটের নিরাপত্তা সুতা হলোগগ্ৰাফিক এবং রং পরিবর্তনশীল হয়। অর্থাৎ নোট নাড়াচাড়া করলে এর রং বদলাবে এবং ছোট ছোট হরফে বাংলাদেশ ব্যাংক লেখাটি ভেসে উঠবে।১০০০ টাকার লাল নোটটি
আলোর বিপরীতে ধরলে নিরাপত্তা সুতায় এক হাজার টাকা লেখা দেখা যাবে।এটি প্রকৃত নোটের নমুনা। নিরাপত্তা সুতাটি আসল নোটে এমনভাবে লাগানো থাকে যে ধারালো কিছু দিয়ে ঘষলেও উঠে আসবে না অথচ জাল নোটে এটা আঠা দিয়ে লাগানো থাকায় সহজে উঠে আসে।
৩. নোটের জলছাপ গুলো খেয়াল করুন। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সম্বলিত নোটগুলো আলোর বিপরীতে ধরলে শেখ মুজিবুর এর ছবি, বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং উজ্জ্বলভাবে নোটের ইংরেজি সংখ্যা১০০০লেখাটি দেখতে পারবেন।
তবে লাল রঙের ১০০০ টাকার নোটের ক্ষেত্রে শাপলা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্ৰাম দেখা যাবে এছাড়া উজ্জল টাকার সংখ্যা লেখা থাকবে শহীদ মিনারের ছবির উপরে।
৪.গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ১০০,৫০০ ও১০০০ টাকার মূল্য লেখার প্রত্যেকটি নোটের উপরে ডান দিকের কোনায় ইংরেজি সংখ্যায় লেখা নোটের মূল্য সংখ্যা রং পরিবর্তনশীল কালিতে মুদ্রিত রয়েছে।১০০ এবং ১০০০ টাকা মূলত লিখিত নোট আস্তে আস্তে নড়াচড়া করলে নোটের মূল্য লেখাটি সোনালী হতে ক্রমে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হতে থাকবে। একইভাবে ৫০০ টাকা মূল্য লেখা নোটে ৫০০ মূল্য মান লেখাটি লালচে হতে পরিবর্তিত হয়ে সবুজ হয়ে যাবে।
অথচ জাল নোটে ব্যবহৃত এই রং চকচক করলেও তা পরিবর্তিত হয় না।
এক হাজার টাকার নোটের পেছনের বাম অংশে আড়াআড়ি ভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক লেখাটি হালকা ভাবে মূদ্রিত দেখা যাবে যেটা নাড়াচাড়া করলে বোঝা যাবে।
এটিএম বুথে জাল নোট পেলে করনীয়:
বর্তমানে এটিএম বুথ গুলোকে একটু বেশিই নির্ভরযোগ্য মনে করা হয়। কিন্তু আপনারা কি জানেন এই এটিএম বুথ গুলোকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মনে করা সত্ত্বেও প্রায়ই এগুলোতে জাল দেখা যায়। তবে ব্যাংকের কাছে বিষয়টি প্রমান করতে হবে।প্রমান করতে পারলে তবেই টাকাটি ফেরত পেতে পারেন।
তবে আপনাকে এক্ষেত্রে জোরালো প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে।যেমন:
১. টাকাটি আপনি এটিএম বুথ থেকে সংগ্রহ করেছেন তার সিসিটিভি ফুটেজ দেখাত হবে।
২. এটিএম বুথের সামনে নিরাপত্তায় দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীর কাছে বিষয়টি জানতে হবে এবং তাদের সাথে থাকা খাতায় নোটের নম্বর বিবরণ ও অভিযোগের বিষয়টি লিখে আসতে হবে।
৩. সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে বিষয়টি অবহিত করতে হবে এবং কোন বুথ থেকে কবে কান সময় টাকাটি তুলেছেন সেটা জানাতে হবে।
মনে রাখবেন প্রচলিত আইন অনুসারে জাল নোট যার হাতে থাকে তাকে বিচারের আওতায় আনা হয় ।কোথা থেকে জাল নোট পেয়েছে বা প্রাপ্ত হয়েছে সেটা দেখা হবে না তাই কোন নোট নিয়ে সন্দেহ হলে সেটা বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা অন্য কোন ব্যাংকে অবহিত করা উচিত। তবে ওই জাল নোট এর বিপরীতে আসল নোট ফেরত পাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
সারকথা
বিভিন্নভাবেই আমরা জাল নোটের সম্মুখীন হয়ে থাকি তবে যদি জাল নোট সম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকে তবে আপনি সহজেই চিনতে পারবেন এবং এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন। সমাজে অর্থহীনদের তেমন মূল্যায়ন করা হয় না কারণ তাদের অর্থ উপার্জন কম । টাকা ছাড়া বর্তমান সমাজে কোন দাম নেই। পরিবারের চাহিদা পূরণ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এই টাকার নোট ব্যবহার হয়ে থাকে।
আমরা তাই নির্ভরযোগ্য সূত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্যের ভিত্তিতে জাল নোটের লক্ষণ সম্বন্ধে আলোচনা করেছি আশা করছি আপনি উপকৃত হয়েছেন। পোস্ট সংক্রান্ত প্রশ্ন কিংবা মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করবেন ।